দ্রীঘাংচু পত্রনিবাস

“দ্রীঘাংচু পত্রনিবাস” ক্যাফেটরিয়ায় বসে আছি। নিত্যানন্দ টেবিলে ফুচকার প্লেট রাখতে গিয়ে বললো- রয়’দা তোমার একটা চিরকুট আছে। আমি হাত বাড়িয়ে নিলাম। দুই হাজার বারো খ্রিস্টাব্দে লেখা জন্মদিনের চিরকুট। কফিতে ফুটান দিতেই মস্তিস্ক থেকে স্মৃতি প্রিভিউ হলো- তেইশে জানুয়ারি মিলির জন্মদিন। সেদিন কাগজখানি ও আমাকে দিয়েছিলো তার বদলে আমি ওকে দিয়েছিলাম এরিখ সেগাল আর গীতবিতান।

মার্বেলস স্টোর থেকে আমরা কিনেছিলাম পিনাটকেক আর ভ্যানিলা আইসক্রিম। নদীর ধারে সন্ধ্যায় হয়েছিলো গানময় গল্পসংকল্প উৎসব। ফানুস উড়েছিলো গুটিকতক আর কুয়াশার ডিনডিন ট্যানট্যানান পার্টি চলেছিলো মধ্যপূর্ব রাত পর্যন্ত। অনেক বন্ধুরা সেদিন আসেনি। মাত্র জনা ছয়েক। তোমার প্রিয়ফুল কবরীশূল আর ত্রিকালসন্ধ্যাও এনেছিলো তোমারই প্রিয় শত্রু পারিজাত বাঙ্কু।

কালোপাড়ের ধুতিশাড়ি পড়েছিলে তুমি, কপালে চন্দ্রতপন এঁকেছিলে হাত ভরতি ছিলো নীলচুড়ি। আমি পড়েছিলাম নীল জিন্স আর সাদা টিশার্ট। বন্ধুরা জমকালো পোষাকে আকাশ করে দিয়েছিলো কালো। যখন পার্টির শেষে রাত বুকে নিয়ে ফিরছিলাম আমরা হাঁটতে-হাঁটতে তখন তুমি একটানা বলছিলে… “ধরা তবে হোক শান্ত, হোক ঘুমচোখা রুই অথবা মৃগাঙ্ক, আসুক আলো, ধরে নিক ঠোঁট ভরা সব বিষাদের ঢেউকে। আরও হাসিছাড়া দিন মরে যাক দ্রুত, ফুরিয়ে যাক মখমলে জমে থাকা সকল ক্ষত। আমরা হাঁটতে-হাঁটতে একটা সমুদ্র পাড়ি দিয়ে দেই, জন্মদিন তার পূর্বপারে হারিয়ে ফেলুক খেই”।

সেদিনের রাতমাখা চোখে এরপর আর আসেনি তেমন জন্ম আন্দোলন স্তব।

© সকাল রয়

চলতি সংখ্যা