(ছেলেটির নাম সান, কয়েকদিন হল পরিচয় হয়েছে রোজ-এর সাথে। আজ রোজ-এর সাথে শাহবাগে দেখা করতে এসে জ্যামে পড়ে নাস্তানাবুদ হল। অতঃপর ট্রাফিকের ঝক্কি সামলে সান পৌঁছালো রোজ-এর কাছে।)
সানঃ এসে গেছি। সরি, দেরি হয়ে গেল।
রোজঃ হুম।
সানঃ আর বোলো না, ঢাকার যে জ্যাম, তাতে আর রক্ষা নেই। যদিও জানি- এই সমস্যা সহজে সমাধান হবে না। যেটা করা উচিত ছিল, সেটা করা হয়নি। ঢাকা এখন বসবাসের সবচেয়ে অযোগ্য শহর।
রোজঃ এই যে শুরু হয়ে গেল…!
সানঃ কী শুরু হল?
রোজঃ বুদ্ধিজীবির তাত্ত্বিক আলোচনা।
সানঃ দ্যাখো, আমি বুদ্ধিজীবি নই। আমি প্রেমিক। তবে প্রেমিক হলে বুদ্ধি-জ্ঞান লোপ পায় এটা মানতেই হবে। দর্শন কী বলে জানো? দর্শন বলে যে….
রোজঃ উফ! সান প্লিজ….!
সানঃ সরি, আচ্ছা তোমার কথা বলো…
রোজঃ জানো, গতরাতে আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি। যতবার স্বপ্নের কথাটা ভাবছি ততবার রোমঞ্চিত হচ্ছি।
সানঃ আচ্ছা্, গতকাল তো পূর্ণিমা ছিল। তাই না?
রোজঃ হ্যা, তো?
সানঃ আমি জ্যোতিষশাস্ত্রের স্বপ্নতত্ত্ব পড়েছিলাম। সেখানে স্বপ্ন নিয়ে দারুন ব্যাখ্যা আছে। আমি তো ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখলেই পঞ্জিকা খুলে স্বপ্নতত্ত্ব মেলাতাম। যদিও এটা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য আছে। তবে এটা অনুমান নির্ভর হলেও এটার পশ্চাতে যে গবেষণা রয়েছে তা অস্বীকার করা যাবে না।
রোজঃ ওহ্ গড! আবার…!
সানঃ আচ্ছা, বলো…
রোজঃ তুমি শোধরাবে না দেখছি… দাঁড়াও, তোমার মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করছি।
সানঃ মানে?
(রোজ মুহুর্তের মধ্যেই কাছে এগিয়ে এসে সান-এর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলো.. নিমেষেই সান-এর বাচালতা থেমে গেল। দুজনের শরীর যেন কাঁপছে। রোজ- এর ঘন নিঃশ্বাস ঝরে পড়ছে শাহবাগের আবছা আলোতে। সান যেন ভাবতেই পারেনি এমন ঘটনা ঘটবে। শান্ত চোখে তাকিয়ে রইলো রোজ-এর ছল ছল চোখের দিকে। রোজ বেশিক্ষণ তাকাতে পারেনি সান-এর চোখের দিকে। লাল হয়ে ওঠা সান-এর চোখে যেন কীসের হাতছানি। নিরবতা ভেঙ্গে রোজ বলল-)
রোজঃ বলো, কী বলছিলে..স্বপ্নতত্ত্বের কথা…
সানঃ না, ইয়ে মানে..বলছিলাম যে আমি পড়েছিলাম পূর্ণিমা রাতে স্বপ্ন দেখলে তা নাকি সত্যি হয়..
রোজঃ এ্যাঁ..? মানে কি?
সানঃ চমকে উঠলে যে!
রোজঃ কিছু না…
(রোজ কিছু না বলে তাকিয়ে রইলো সান-এর শান্ত চোখের দিকে। সান- এর ঠোঁট এখনও লাল হয়ে আছে। মনে মনে বলতে থাকে, ‘সান, আসলে আমি গতরাতে তোমাকে চুমু খাওয়ার স্বপ্নই যে দেখেছিলাম..’)
– সুদেব চক্রবর্তী