লেখক প্যানেল
শিশির আজম

শিশির আজম’র গুচ্ছ কবিতা

পঁচা আপেলের বিষয়ে তদন্ত

পঁচা আপেলের ভেতর ওকে পেয়েছিলাম, ক্ষতজর্জরিত।
এখন আমার তীব্র শীতের দীপ্তি, স্পর্ধিত
শিলাময়তায় সপ্রত্যয় বাগানের আলেখ্য--
বাইরের ফিসফিসানি, অবিশ্বাস অথবা চোরা চাহনি
বাদামের গরম বয়োমের পাশে রেখে
এপ্রশ্ন কি আমরা করতে পারি যে আপেল কেন পঁচে?

কালো ত্বকের নিচে আমি তেরো মাস

তার কালো ত্বকের নিচে আমি তেরো মাস
ঘুমায়ে ছিলাম
ভালবাসছিলাম নিজেরে
ঈর্ষা করছিলাম
ঘৃণা করছিলাম
নিজেরে
কুকুরের লাহান নিজেরে খামচাইতেছিলাম
রক্ত বারোইতেছিল
লাল
কালো ত্বকের নিচে তাজা লাল রক্তে
ঐটা
ঐ ভালবাসা
মিশে গেছিল তো

মৃত কবিদের প্রতি খিস্তি

মৃত কবিদের থেকে আমাদের আর মুক্তি নেই
ওরা
লিখেই চলেছে লিখেই চলেছে
কবিতা
বছরের পর বছর আর যুগ যুগ ধরে ডাঁশা ডাঁশা মিষ্টি মিষ্টি কবিতা
একাডেমির নিষ্কলঙ্ক কবিতা
দেশপ্রেমের কবিতা
প্রকৃতিপ্রেমের কবিতা
ঋতুস্রাবহীন কবিতা
চিৎকার চেঁচামেচি নেই এমন কবিতা
সাপ্তাহিক আর পাক্ষিক আর মাসিক সাহিত্য পাতায়
ওরা
গেঁড়ে বসে আছে
হ্যা আমরা ওদের দেখতে পাচ্ছিনে
আমাদের বুড়ো বুড়ো কবিদের দিয়ে
তরুন কবিদের দিয়েও
ওরা লিখিয়ে নিচ্ছে কবিতা
আর সেসব আমরা গিলছি
শ্রদ্ধা দেখাচ্ছি
যেহেতু মৃত কবিদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোই নিয়ম
কিন্তু
এমন তো না যে কোন অসতর্ক মুহূর্তে
কোন সুস্থ পাঠকের
কখনো
বমি পাবে না
বা হৃষ্টপুষ্ট আর জাদরেল মৃত কবিদের নিয়ে
সে
খিস্তি করবে না

না

আজকের মা-বাবারা খুবই সচেতন
বাচ্চাদের শেখান
আগুনে হাত দিও না
বেশি জলে নেমো না
গাছের মগডালে চড়ো না
না
না
না
বাচ্চারা ভাবো তো এই 'না'গুলোকে নিয়ে
কী করা যায়

জগতের মন

অথচ
তার হাতে কোন সুতো ছিল না
আর
সুতো না থাকাটাই প্রমাণ করে
যে তার হাতে সুতো ছিল, সরিসৃপের বিশাল জিহ্বার ডগায়।
সে আমাকে বেঁধেছে এস্কিমোর অন্তহীন নৈঃশব্দ্যে
জগতের শঙ্কাহীন দৃশ্যাদির মাঝে,
এটা ভাল না মন্দ এবিচার পরের।
তবে
প্রাগৈতিহাসিক উপত্যকা আর প্রেমবৈষম্যের বংসপরাম্পরায়
যারা বাঁধা পড়েছে
যারা বেঁধেছে
এদের
সম্পর্কের অবস্থান নিয়ে যৌক্তিক কোন সমাধান কি
পেয়েছি আজও, অথবা এদের ভেতরকার অতিবেগুনী পরাবাস্তবতা?
কিভাবে
কেন
আমার জলের পাহাড়
অথবা চিনা স্কাইস্কেপ?
নজরে পড়েনি কখনো
গ্রন্থিতে বাঁধানো সুতো বা সুড়ঙ্গের এ্যানটিক স্টাডি।
তেলাপোকা নিয়ে আমার কৌতুহল আছে।
এখন জানা দরকার
সুতো বিষয়ে
তেলাপোকার মতামত কী
আর তেলাপোকা
তেলাপোকা কি না।

শিশির আজম
শিশির আজম । জন্ম : ২৭ অক্টোবর, ১৯৭৮। জন্মস্থান, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা : এলাংগী, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ -৭৩৩০, বাংলাদেশ। কাব্যগ্রন্থসমূহ : ছাই (২০০৫), দেয়ালে লেখা কবিতা (২০০৮), রাস্তার জোনাকি (২০১৩), ইবলিস (২০১৭), চুপ (২০১৭), মারাঠা মুনমুন আগরবাতি (২০১৮), মাতাহারি (২০২০), টি পোয়েট্রি (২০২০), সরকারি কবিতা (২০২১), হংকঙের মেয়েরা (২০২২), আগুন (২০২৪), চা কফি আর জেনারেল কানেকটিভিটি (২০২৪), সন্ধ্যায় তিমিমাছ (২০২৫), প্রবন্ধ : কবির কুয়াশা (২০২৫)
বার পড়া হয়েছে
প্রকাশিত :
জুলাই ১৭, ২০২৫
শেয়ার :
পয়স্তিতে যারা লিখেছেননির্দেশিকাশর্তাবলী
১০ দিনে জনপ্রিয় লেখক
magnifiercrossmenu